গ্র্যাভিটি নিয়ে বিতর্কিত আলোচনা করতে করতে গত পর্বে ব্লগটি তেমন বিষয়বহুল কিংবা তথ্যবহুল হয়ে উঠেনি। হয়নি বললে ভুল হবে, ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্লগটি একটু হাস্যরসাত্বকভাবে আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম! যেন এই সিরিজের পরবর্তী পার্টগুলোর জন্য পাঠকদের অ্যাটেনশন সিক করতে পারি এবং তাতে বোধ হয় আমি কিছুটা সফলও হয়েছি।
ব্লগটি অল্প সময়ে ভালো রেস্পন্স পেয়েছে! ব্লগ নিয়ে আমার এই প্রয়াস, সবকিছুই আপনাদের জন্যই। আমার ব্লগগুলোতে বরাবরই ইনফরম্যাশনস এর একটু ঘাটতি লক্ষ্য করে থাকবেন। বলি! আমি তা ইচ্ছে করেই করি। এর পিছনে আমার কাছে একটি স্ট্রং রিজন কাজ করে। তা হলো! কঠিন বিষয়গুলো একটু রস মিশিয়ে লিখতে পারলে পাঠকদের বুঝতে এবং আমারও বিষয়গুলো তুলে ধরতে সুবিধা হয়।
হোক না একটু ইনফো এর ঘাটতি! সেজন্য গুগল, উইকিপিডিয়া তো রয়েছেই। আমি কেবল অতিপ্রয়োজনীয় বিষয় বা তথ্যগুলো; যা একদম না জানলেই নয়! সে ইনফরম্যাশনগুলো আমার পাঠকদের হস্তান্তর করতে চাই।
গত পর্বে আমরা মাধ্যাকর্ষন সূত্রকে ঘিরে সেই বিখ্যাত গল্পের ২ প্রধান চরিত্র (আইজ্যাক নিউটন ও আপেল) এর সাথে পরিচিত হয়েছিলাম।
এদেরক নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোকপাত না করলেই নয়!
আইজ্যাক নিউটনকে যদি আপনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলে তর্কে জড়িয়ে যান, তবে আপনি একা নন! অনেকেই আপনার সাথে একমত হবেন। তবে তার সময়কার গ্রেটেসট সায়েন্টিস্ট তিনিই ছিলেন - সাত-পাঁচ না ভেবেই এরকম দাবি করা অযৌক্তিক নয়। নিউটন ছিলেন বিজ্ঞানমহলে সবার কাছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। তার দৃষ্টিভঙ্গি, তার সৃষ্টিশীলতা ছিল সেসময়ের আর ৫-১০টা বিজ্ঞানীর তুলনায় অনেক বেশি আপডেটেড। মাধ্যাকর্ষণের ধারণা তার আগেই অনেকের মাথায় আসলেও, নিউটন যখন এর সূত্রটি আবিষ্কার করে, গোটা বিজ্ঞানমহল নড়ে চড়ে বসেছিল।
সবার একটাই প্রশ্ন! কীভাবে নিউটন মধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব অনুধাবন করেছিলেন? তাহলে শুনুন সেই গল্পটি!
মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব কীভাবে নিউটন টের পেয়েছিলেন?
১৬৬৬ সালে নিউটন ক্যামব্রিজ ছেড়ে চলেন যান তার মায়ের কাছে, লিংকনশায়ারে। সেখানেই একটি বাগানে বসেছিলেন কোনও এক বিষয় নিয়ে বিচলিত হয়ে এবং পারিপার্শ্বিক ঘটনাগুলো অনুধাবন করার চেষ্টা করছিলেন।
বসেই তিনি ছিলেন, হঠাৎ তার সাথে একটি অলৌকিক অঘটন ঘটে যায়। নিউটনের মাথায় গাছ থেকে একটি আপেল পতিত হয়।
একটি অতিসাধারণ ঘটনা! কিন্তু নিউটনও তো সাধারণ থিংকইং অ্যাবিলিটির মানুষ ছিলেন না। ব্যাপারটি তিনি সাধারণভাবে নিতে পারেননি। বরং বিচলিত হয়ে গেলেন এই ভেবে যে, আপেলটি কেন তার মাথার উপরই পড়ল? তথাপি আপেলটি উপরের দিকে মানে আকাশে আকাশ অব্দি পতিত হতে পারত না?! কেন তাকে নিচে ভূপৃষ্ঠেই পতিত হতে হলো?
রহস্যের গন্ধ পেলেন নিউটন! এই রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে নিউটন আবিষ্কার করলেন, শৃষ্টিজগতের প্রতিটি পদার্থই ওপর একটি পদার্থকে তার নিজের দিকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বলের প্রভাবেই আপেলটি উপরে না পড়ে নিচে পড়ল। সেই ছোট্ট আপেলের বদৌলতে নিউটন তার শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার মাধ্যাকর্ষণ সূত্রের দেখা পেয়ে গেলেন।
মাঝে মাঝে আমি শুধু একটা বিষয় ভাবি! সেদিন যদি নিউটনের মাথায় আপেল না ভেঙ্গে তাল ভেঙ্গে পড়ত তাহলে কি আর মাধ্যাকর্ষণ সূত্র আবিষ্কার করার জন্য নিউটন অক্ষত থাকতেন? দুধ কা দুধ, পানি কা পানি সেদিনই হয়ে যেত। পদার্থবিজ্ঞান বা গ্র্যাভিটির সাথে রিলেটেড বিজ্ঞানের আরও কিছু শাখা যেমনকি বলবিজ্ঞান আজ পানির মতো সোজা থাকত! ইভেন ম্যাথেমেটিক্সেও এর প্রভাব পড়ত ভালোভাবেই। যাইহোক, এবার ভুল আলোচনায় স্যরি! স্যরি! মূল আলোচনায় ফিরে আসি।
যুক্তিখন্ডণ করে জেনে নিব মাধ্যাকর্ষণ কী?
আমরা যে পৃথিবীর উপর দিয়ে দিব্যি হাটাচলা করি, প্রয়োজনে দাড়িয়ে, শুয়ে, বসে যেমনে ইচ্ছা বিচরণ করি। কখনও ভেবে দেখেছেন কি? আমরা পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে পড়ে যাইনা কেন? কারণ এখানে একটি গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স কাজ করে। ৯.৮মিটার/সেকেন্ড গতিতে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে এর অভ্যন্তরীণ বস্তুগুলোকে আকর্ষণ করছে। আর এই আকর্ষণ বল এতই বেশি যে আমরা পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে পড়ে যাইনা।
To Be Continued..