ফেইসবুকএর বয়স কত আসলে?
দেখতে দেখতে ফেইসবুকের বয়স ১৯ বছর হতে চাইল। চলতি মাসের ২৮ তারিখ ফেইসবুক পা দিবে তার ১৯তম আয়ুষ্কালে। সেই হিসেবে ফেইসবুক আমার থেকে ২ বছরের ছোট। বয়সে ছোট হলেও আমার প্রতি ফেইসবুকে প্রভাব অনেক বেশি, কিংবা আমার থেকেও বড় যারা আছেন, তারাও টেক্নিক্যালি এই ১৯ বছরের ছোট্ট ফেইসবুকে কাছে পরাজিত। ১৯ বছর আগে ফেইসম্যাশ (FaceMash) নামে ইন্টারনেটে ফেইসবুকের আবির্ভাব ঘটে। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যা ফেইসবুক নামে আত্মপ্রকাশ করেন (সেই হিসেবে ফেইসবুকের Actual বয়স বর্তমানে ১৮বছর চলে) ফেইসম্যাশ ও ফেইসবুকেরই একটি ভ্যারিয়েন্ট ছিল, কিন্তু ফেইসবুকের দ্বিতীয় যে জন্মদিনটা (০৪/০২/২০০৪) সেটাই সবার ফোকাসে আসে। এই হযবরল ফ্যাক্টটার জন্য শুরুতেই মাফি চেয়ে নিলাম সবার কাছে। Next..
ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা কে?
অনেকেই ভেংচি কেটে বলবেন, এ আবার কোনও প্রশ্ন হলো? তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা যা জানেন তা হচ্ছে আংশিক। ফেইসবুকের সার্বজনিন প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মার্ক জাকারবার্গ পরিচিতি পেয়ে যায়; যদিও প্রতিষ্ঠালগ্নে আরও কিছু মানুষ ছিল ফেইসবুকের সাথে, যাদের কখনোই তেমন হাইলাইট হতে দেয়নি জাকার। মার্ক জাকারবার্গ তখন হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তার সাথে একই প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া আরও কিছু স্টুডেন্ট ছিল যারা ছিল ফেইসবুকের উদ্ভাবনার সাথে সম্পৃক্ত। আসুন তাদের নাম জেনে নেই। জুকারকে দিয়েই শুরু করি? (Including him, cause i wanna do a complete list)
- ১. মার্ক জাকারবার্গ (তার নাম বর্তমানে ডিকশনারী তেও পাওয়া যায়🙂)
- ২. এডুয়ার্ডো স্যাভেরিন (২০১৮ সালের হিসাবমতে ৫৩ মিলিয়ন ফেইসবুক শেয়ারের মালিক)
- ৩. এন্ড্রু ম্যাককলাম (২০০৭ সালে ফেইসবুক ছেড়ে দেন তিনি)
- ৪. ডাস্টিন মস্কোভিটজ (২০০৮ সালে ফেইসবুক ছেড়ে দেন)
- ৫. ক্রিস হিউজ (ফেইসবুকের মুখমাত্র)
১০ বছরেও নেই কোনও আপডেট
ফেইসবুকের একাল সেকাল লিখতে নিয়ে রীতিমতো নস্টালজিয়া ভর করছে। আসলেই নস্টালজিক এই পথচলা। ফেইসবুকে প্রতিবছরই মেজর কিছু আপডেট হচ্ছে। আপডেটটা কীরকম লেভেলে হয়েছে সেটি Compare করতে চাইলে আমি আপনাদের সাজেস্ট করব, ফেইসবুক এর জাভা এপ্লিকেশনটি পরখ করে দেখতে। তাহলেই বুঝতে পারবেন এক রাত দিনের তফাত। কারণ এন্ড্রয়েড আসার পর ফেইসবুক আর জাভা ভার্সনের দিকে চোখ তুলে তাকায়নি। বিগত ১০বছরে জাভা এপটির কোনও আপডেট আসছে কিনা সন্দেহ। আমার মনে হয়, ফেইসবুকের এই বিষয়টা চিন্তায় রাখা উচিত এখনও সংখ্যায় কোটি কোটি মানুষ জাভা ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। অন্তত তাদের কথা ভেবে হলেও জাভা অ্যাপটি আপডেট করা উচিত।
কোথায় গেলো পোক?
একসময় ফেইসবুকে পোক করা যেত মানুষকে। আই মিন, খোঁচা দেয়া যেত। নির্দ্বিধায় ফেইসবুক পোক সিস্টেমটা একটা ফ্লপ স্ট্রেটেজি ছিল। যখন পোক এর বসবাস ছিল, তখনও মনে হয় সপ্তাহে ২টা খোঁচা খাইতাম কিনা সন্দেহ। কিন্তু এখন আর সেই অপশন নেই, ফেইসবুকের mbasic ভার্সন ব্যতীত। হ্যাঁ, বিলিভ ইট ওর নট। ফেইসবুকে এখনও আপনি পোক করতে পারবেন কাউকে ব্রাউজার দিয়ে mbasic মোডে প্রবেশ করে, কিন্তু সেটা কাংখিত ব্যাক্তির নটিফিক্যাশন অব্দি পৌঁছুবে না। সো স্যাড😥
ফেইসবুক রিয়েকশন
ফেইসবুকে রিয়েকশন সিস্টেমটা আমার সবচেয়ে বাজে লাগে। একটা সময় ছিল যখন ফেইসবুকে রিয়েকশন ছিলনা। একাধিক ক্লিক করে রিয়েক্ট দিতে হত না। জাস্ট এক ক্লিকে লাইক পাঠিয়ে দিলেই হতো! কেউ অভিযোগও করত না, কিরে লাইক দিলি কেন, ছবি পছন্দ অয়নাই? দে পাল্ডায়া লাভ দে🙂 হইছে কামসাড়া! আর ভুল করে কারও ফডুতে হাহা পইড়া গেলেই শেষ। রিসেন্টলি এরকম নিউজও কানে আসছে যে, ফেইসবুকে হাহা রিয়েক্ট দেওয়ায় অপরাধে এই যুবক খুন ঐ তরুণি রেইপড। এরকম অনেক অকারেন্স হরহামেশাই দেখা যায় ফেইসবুক রিয়েক্টনকে কেন্দ্র করে। আল্লাহ জানে কোন ভূত শোয়ার হইছিল সেদিন জাকারের মাথায় না কোন নিউক্লিয়ার রিয়েকশন ভর করেছিল সেটা মার্কই ভালো জানে!
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্যু
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কেলেংকারীর পিছনে ফেইসবুকের হাত আছে এটা নিয়ে গুঞ্জন ছিল, কথাটা আসলে প্র্যাক্টিকালি সত্য। স্পেইনের চার্লেস থ্রি ইউনিভার্সিটি অব মাদ্রিদ-এর রিসার্চমতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রচারণা চালাতে ফেইসবুকে ৪৪ মিলিয়ন ডলার স্পেন্ড করেন, যেখানে ডেমোক্রিট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন স্পেন্ড করেন মাত্র ২৮ মিলিয়ন ডলার। সূতরাং বলা যায় তাদের প্রচারণার এই বিস্তর পার্থক্যই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে জয়লাভে একটি ট্রাম্পকার্ড ছিল। অথচ সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পই আজ ফেইসবুক, টুইটারের উপর বিরক্ত হয়ে নিজের মালিকানাধিন আরেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল খুলে বসে আছেন, যদিও তিনি নিজেই তেমন এক্টিভ থাকেন না সামাজিক সেই মাধ্যমটিতে।😐
আজ এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। ভালো সাড়া পেলে ফেইসবুকের একাল সেকাল পার্ট-২ নিয়ে হাজির হবো, ইনশাআল্লাহ